ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির শতভাগ দায় নিজের ওপর নিয়ে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। কিন্তু দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে তা খারিজ করে দেয় সিনিয়র নেতারা। এবার রাহুলকে নেতৃত্বে রেখে নতুন ফর্মুলা প্রয়োগের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে।
কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, নতুন ‘ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট’ (কার্যকরী সভাপতি) পদ সৃষ্টির চিন্তা-ভাবনা করছে কংগ্রেস। এতে রাহুলের চাপ কিছুটা হালকা হবে। কার্যকরী সভাপতি দলের দৈনিন্দিন কাজকর্ম সামলাবেন। অন্যদিকে দলের স্বার্থে বৃহৎ কোনো কাজে মনোযোগ দিতে পারবেন রাহুল। ইতিমধ্যেই নতুন এ পদের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গেছে।
কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির (সিডব্লিউসি) কার্যকরী সভাপতির পদে কাকে বসানো হবে,তা নিয়ে দলের অন্দর মহলে আলোচনা চলছে। শুরু হয়েছে তদবির-তৎপরতা। যে নামগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে, শুরু হয়েছে তাদের দক্ষতা, সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এ পদে এগিয়ে রয়েছেন প্রিয়াংকা গান্ধী,সচিন পাইলট, অশোক গেহলট ও জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।
গান্ধী পরিবারের মধ্যে পাবলিক ফিগারে কাউকে ভাবলে প্রথমেই থাকবেন প্রিয়াংকা। যদিও গত ২৫ মে রাহুল ইস্তফা দেয়ার সময়ই বলেছিলেন, গান্ধী পরিবারের কাউকেই যেন কংগ্রেস সভাপতির পদে ভাবা না হয়। কিন্তু তারপরও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ভাবনায় রয়েছে প্রিয়াংকার নাম। জন্ম থেকেই রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে উঠায় কংগ্রেসের এই নেত্রীর সঙ্গে সাধারণ মানুষ এবং নিচু তলার কর্মীদের সঙ্গে তার রয়েছে নিবিড় যোগাযোগ।
সাবেক কংগ্রেস নেতা রাজেশ পাইলটের ছেলে ৪১ বছরের সচীন বয়সে তরুণ। ২০১৩ সালে তাকে কংগ্রেসের পুনর্গঠনে রাজস্থানে পাঠানো হয়েছিল, তিনি একনিষ্ঠভাবে সেই কাজ করেছেন। ২০১৮ সালে মুখ্যমন্ত্রীর পদের অন্যতম দাবিদারও ছিলেন তিনি। সচীন কংগ্রেসকে রাজস্থান উপহার দিলেও তাকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়নি। ঘনিষ্ঠ সচীনকে আরও বড় দায়িত্ব দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন রাহুল।
অন্যদিকে ‘পার্টি ম্যান’ অশোক গেহলট রাজনীতিতে অভিজ্ঞ এবং প্রবীণ। ভালো সংগঠক। তার সেই দক্ষতাকে কাজে লাগাতে পারে কংগ্রেস।
প্রয়াত কংগ্রেস নেতা মাধব রাও সিন্ধিয়ার ছেলে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াও রয়েছেন এ তালিকায়। অবশ্য সচিন পাইলটের মতো অতটা স্বাধীনচেতা নন, বরং শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেই তিনি অভ্যস্ত। এ গুণই গান্ধী ভাগ্য খুলতে পারে জ্যোতিরাদিত্যের।